খালের পানিতে লড়াই করছিল দুই গুইসাপ। সড়কে দাঁড়িয়ে সাপের এমন কুস্তি দেখছিলেন উৎসুখ মানুষ। কুস্তিতে একে ওপরের গায়ের ওপর উঠে শক্তির জানান দিচ্ছিল দুটি সাপ-ই। আবার কখনো মাথা উঁচিয়ে দেখছিল দর্শনার্থীদের।
এভাবে তাদের এই লড়াই গড়ায় প্রায় দুই ঘন্টার কাছাকাছি। দীর্ঘ এই লড়াইয়ে কেউ-ই যেন হার মানতে নারাজ। দুই গুইসাপের এমন মজার লড়াইয়ের সময় দর্শনার্থীদের কেউ তাদের বিরক্ত করেনি। গতকাল সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকালে নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার তৈরাপাড়া গ্রামের পাকা সড়কের ধারে একটি খালে গুইসাপ দুটি লড়াই চালায়।
স্থানীয়রা জানান, নিরবে সাপ দুটির লড়াই দেখছিলেন উৎসুখ মানুষ। সাপের লড়াইয়ের ছবি ও ভিডিও মুহূর্তেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
তৈরাপাড়া গ্রামের বাসিন্দারা জানান, খালের গা ঘেঁষে বয়ে গেছে মানুষ চলাচলের সড়ক। সড়কে হেটে যাওয়ার সময় প্রথমে সাপ দুটিকে লড়াই করতে দেখেন দুই পথচারী। পরে লড়াই দেখার জন্য দুই পথচারী আশেপাশের লোকজন জড়ো করেন।
ধীরে ধীরে নানা বয়সি মানুষ সাপের লড়াই দেখতে ভিড় জমান। উৎসুখ মানুষের মধ্যে অনেকেই ছবি তোলেন। আবার অনেকেই ভিডিও ধারণ করে তা ফেসবুকে ছড়িয়ে দেন। ভিডিওটি প্রকাশ পাওয়ার পর আশেপাশের আরো মানুষ ঘটনাস্থলে এসে স্বচোখে সাপের লড়াই উপভোগ করেন।
গ্রামের কৃষক আব্দুল আজিজ, মজিবুর রহমান বলেন, এই গ্রামে এর আগে সাপের লড়াইয়ের ঘটনা ঘটেনি। গুইসাপ দুটি ছন্দে ছন্দে কুস্তি লড়ছিল। সাপদুটি পরস্পরকে জড়িয়ে পানির প্রায় দেড় ফুট উচ্চতায় খারা হয়ে লড়াই করছিল। সেই লড়াই দেখতে তাদের মতো শত শত মানুষ ভিড় জমিয়ে ছিল।
বাংলাদেশ জীববৈচিত্র সংরক্ষণ ফেডারেশনের প্রচার সম্পাদক ফজলে রাব্বী বলেন, গ্রামে আর গুইসাপের দেখা মেলেনা। এটি এখন বিপন্ন প্রাণী। এই সাপ অনেকটা নিরীহ প্রকৃতির। এর বিষ নেই, কাউকে কামও দেয়না। তবে খাল-বিলে পানি এলে গুইসাপ আনন্দে আত্মহারা হয়ে উঠে। নাচে তালে কুস্তিতে লিপ্ত হয়।
তার মতে, লড়াইয়ে নামা গুইসাপ দুটি পুরুষ ছিল। সাপ দুটি একে অপরকে পানি থেকে সরিয়ে দিতে মারামারিতে লিপ্ত হয়েছিল। শত শত মানুষ ভীড় জমিয়ে লড়াই দেখলেও সাপ দুটি পালিয়ে যায়নি। বরং লড়াই চালিয়ে গেছে। তিনি নিজেও লড়াই দেখেছেন।