৫ আগস্ট, ২০২৩

নাটোরে ড্রাগন চাষে উচ্চ ফলন পেয়ে কৃষকের মুখে হাসি

নাটোরে স্বল্প খরচে অধিক উৎপাদন ও লাভজনক হওয়ায় নাটোরে ড্রাগন ফলের চাষ দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এরইমধ্যে এ ফলের চাষ করে লাভের মুখ দেখেছেন শতাধিক কৃষক। বিদেশি জাতের পুষ্টি ও ওষুধি গুণ সমৃদ্ধ হওয়ায় বাজারেও ড্রাগন ফলের ব্যাপক কদর রয়েছে। বর্তমানে জেলার প্রায় গ্রামে ও বাড়ির পরিবারের সদস্যদের চাহিদা মেটাতে ড্রাগন ফলের চাষ করছেন।এতে জৈব সার ছাড়া অন্য কোনো সার বা কীটনাশকের প্রয়োজন হয় না।

গাছের চারা রোপণের এক বছর পর থেকেই ফল ধরা শুরু হয়। এতে জৈব সার ছাড়া অন্য কোনো সার বা কীটনাশকের প্রয়োজন হয় না। গাছের চারা রোপণের এক বছর পর থেকেই ফল ধরা শুরু হয়। একবার ফল দেওয়া শুরুর পর টানা প্রায় ২৫ বছর পর্যন্ত একটি ড্রাগন গাছ থেকে ফল পাওয়া যায়। প্রতি মৌসুমে গ্রীষ্মের সময় ৭ থেকে ৮ মাস ফল পাওয়া যায়।

স্থানীয় বাসিন্দা পল্লী চিকিৎসক মোঃ শফিকুল ইসলাম, ইমরান হোসেন, ছাগল বেপারি আমির হোসেন সহ আরো অনেকে জানান, এক সময় এই ফলের নাম শুধু তারা শুনেছেন। এখন নিজের এলাকায়ই তা দেখতে পাচ্ছেন এবং তা কিনে খেতেও পারছেন।
 

নাটোর সদরের বিপ্র হালসা ইউনিয়নের গৌরীপুর গ্রামের ড্রাগন ফল চাষি মোঃ সাইফুল ইসলাম বাবলু  জানান, কৃষি বিভাগের পরামর্শে তিনি এই ফল চাষে উদ্বুদ্ধ হন। বর্তমানে হালসা ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি অফিসার মো:সাইফুল ইসলাম আমার ড্রাগন ফলের বাগান নিয়মিত পরিদর্শন ও পরামর্শ দিয়ে থাকেন।প্রথমে শুরু করেন ৩ বিঘা জমি দিয়ে বর্তমানে ৭ বিঘা জমি ড্রাগন ফলের চাষ হচ্ছে। বর্তমানে আমার জমি থেকে ড্রাগন ফল নিয়মিত বিক্রি করছি।

প্রতি বিঘা জমিতে ড্রাগনের ফলন আসে ৫০ থেকে ৬০ মন। প্রতি মন ড্রাগন ফল বিক্রি হয় ৬০০০ টাকা। সাইফুল ইসলাম আরো বলেন আমার সর্বমোট ৭ বিঘা জমি থেকে প্রত্যেক বছরে ২১ লক্ষ টাকা ড্রাগন ফল বিক্রি করে থাকি।ড্রাগন চাষ করে লাভবান হয়ে আমি খুবই সন্তুষ্ট। তবে কৃষি বিভাগ আমাদের ড্রাগন বাগানের প্রতি নজর ও নিয়মিত পরামর্শ দিতে পারলে আরো লাভবান হওয়ার সম্ভব।

ড্রাগন চাষ বাড়ালে ও ফল রফতানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব। ফলের বাগান তৈরি করাই এলাকায় কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। তিনি আরো বলেন বর্তমানে আমার ড্রাগন বাগানে ৫ জন লোক নিয়মিত কাজ করে থাকে।
 
নাটোর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষি নীলিমা জাহান  জানান, পুষ্টি ও ওষুধি গুণ সম্পন্ন ড্রাগন ফলের চাষ ক্রমশ বাড়ছে। বর্তমানে নাটোর সদরে ৪৫ হেক্টর জমিতে ড্রাগন চাষ হচ্ছে। কৃষকের সংখ্যা মোট ২১০ জন। প্রতি হেক্টর জমিতে ড্রাগন ফলের গড় ফলন ৫ মেট্রিক টন/, মোট উৎপাদন ২২৫ মেট্রিক টন।

তিনি আরো জানান, ডায়াবেটিস সহ বিভিন্নরোগে, ড্রাগন ফলের ব্যবহার রয়েছে। এ ফলের চাষ বাড়াতে আরো লাভজনক করতে ইউনিয়ন কৃষি উপসহকারীরা বিভিন্ন সময়ে বাগান পরিদর্শন ও পরামর্শ দিয়ে থাকেন।কৃষকদের উৎসাহিত করতে ও ড্রাগন ফলের ফলন বাড়াতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।