আগুন লেগেছে সুনামগঞ্জের ধর্মপাশার জয়শ্রী ইউয়নিয়নের একটি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে। এতে দুই নারীসহ একই পরিবারের ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) গভির রাতে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটে। আগুনের সূত্রপাত সম্পর্কে এখনো কিছু জানাযায়নি।
নিহতা হলেন, এমারুল ইসলাম (৫০), তার স্ত্রী পলি আক্তার এবং এই দম্পতির চার সন্তান পলাশ মিয়া (৯), ফরহাদ (৭), ফাতেমা বেগম (৫) ও উমর ফারুক (৩)। এই পরিবারের প্রধান এমারুল পেশায় জেলে ছিলেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দীন, ধর্মপাশা সার্কেলের সহকারি পুলিশ সুপার আলী ফরিদ ও ধর্মপাশা থানার ওসি এনামুল হক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ওসি এনামুল হক বলেন, তারা ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। বর্তমানে আগুন নিয়ন্ত্রণে আছে। তবে কিভাবে আগুনের সূত্রপাত ঘটেছে তা এখানো জানাযায়নি।
পুলিশ বলছে, গতকাল দিবাগত রাত ১২ টার দিকে আশ্রয়ণের ওই ঘরে আগুনের সূত্রপাত হয়। তবে কীভাবে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়ে তা কেউ বলতে পারছেন না।
স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, ২০২১ সালে সরকারি অর্থায়নে গৃহহীন ও ভূমিহীনদের জন্য ৩৪ টি আধাপাকা ঘর নির্মাণ করা হয় উপজেলার জয়শ্রী ইউনিয়নের সীমের খাল গ্রামে। এই আশ্রয়ণ প্রকল্পে ৩৪টি পরিবার বাস করে। গতকাল রাত ১২ টার দিকে হাওরে মাছ শিকার করে ঘরে ফেরার পথে সীমের খাল গ্রামের বাসিন্দা জেলে সাইফুল ইসলাম আশ্রয়ণ প্রকল্পের এমারুলের ঘরে আগুন জ্বলেতে দেখেন। এসময় তিনি ডাক চিৎকার শুরু করেন। এসময় স্থানীয় লোকজন আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। সেসময় এমারুলের ঘরের দড়জা ভেতর থেকে বন্ধ ছিল। চেষ্টার পর রাত ২ টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। ততক্ষণে সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে যায়। পুড়ে অঙ্গার হয়ে যায় ছয়টি তাজা প্রাণ।
ধর্মপাশা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এনামুল হক মুক্ত প্রভাতকে বলেন, সোমবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে তিনি আগুন লাগার খবরটি পান। সকাল সাড়ে সাতটার দিকে সীমের খাল গ্রামে গিয়ে ঘটনাস্থল থেকে ছয়টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে পুড়ে যাওয়ার ফলে লাশ চেনার কোনো উপায় নেই। মৃত্যুর কারণ নির্ণয়ের জন্য লাশগুলো সুনামগঞ্জ জেলা আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। কী কারণে এই অগ্নিকাণ্ড এবং কীভাবে আগুন লেগেছে তা এখনই বলা যাচ্ছে না। রহস্য উদ্ঘাটনের চেষ্টা করছেন তারা।
সীমের খাল গ্রামের বাসিন্দা নিহত পলি আক্তারের ছোট ভাই মনির মিয়া (২০) বলেন, তার বোন ভগ্নিপতির মধ্যে কোনো বিবাদ ছিল না। রাতে বোনের বাড়িতে দাওয়াতও খেয়েছেন তিনি।
ধর্মপাশার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দীন মুক্ত প্রভাতকে বলেন, অগ্নিদগ্ধ হয়ে একই পরিবারে ছয়জনের মৃত্যুর খবরটি বেদনাদায়ক। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে লাশ দাফনের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থসহায়তা দেওয়া হবে।