বান্দরবানের থানচি উপজেলার রেমাক্রী ইউনিয়নের বড়মদক বাজার কেন্দ্রটি দুর্গম এলাকায়। ইঞ্জিনচালিত নৌকায় থানচি সদর থেকে বড়মদক পৌঁছাতে সময় লাগে ৮ ঘণ্টা; তাও এক নৌকায় চার–পাঁচজনের বেশি যাওয়া যায় না।
শুষ্ক মৌসুমে পানি কম থাকায় সময় আরও বেশি লাগে; নৌকা আটকে যায়। যাত্রীদের অর্ধেক হেঁটে আবার অর্ধেক নৌকায় যেতে হয়।
বড়মদকের মত বান্দরবানের কোনো কোনো কেন্দ্র যেমন দুর্গম পাহাড়ি এলাকায়, তেমনই মোবাইল নেটওয়ার্কবিহীন। এসব কেন্দ্রে ভোটারদের হেঁটে আসতেই সময় লাগবে ৪ থেকে ৫ ঘণ্টা।
কোনো কোনো কেন্দ্রে ভোটারদের ভোটের একদিন আগে আসতে হবে। এতে নৌকা ও খাওয়া–দাওয়া মিলে একজন ভোটারের খরচ পড়বে আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা। এসব দুর্গম কেন্দ্রে নির্বাচনি সরঞ্জাম পৌঁছাতে প্রতিবছরই হেলিকপ্টার ব্যবহার করা হয়।
রেমাক্রী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুইশৈথুই মারমা বলেন, আমার ইউনিয়নে সবচেয়ে দুর্গম কেন্দ্র বড়মদক বাজার কেন্দ্র। এখানে নির্বাচনি সরঞ্জাম আনা–নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিবার হেলিকপ্টার ব্যবহার করা হয়।
তবে সাঙ্গু নদীর উৎপত্তিস্থল একেবারে মিয়ানমার সীমান্তবর্তী হওয়ায় ভোটারদের জন্য একটা বড় চ্যালেঞ্জ। সেখান থেকে ভোটকেন্দ্রে আসতেই একদিন সময় লাগে। শীতের শুষ্ক মৌসুমে এক নৌকায় চারজনের বেশিও উঠা যায় না; ভাড়া লাগে পাঁচ থেকে ছয় হাজার টাকা।
তবে যেহেতু দুর্গম এলাকায় কেন্দ্র, তাই ভোটারদের অবশ্যই একদিন আগে আসতে হবে। খাওয়া–দাওয়াসহ সবকিছু মিলিয়ে ভোটারদের খরচ আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা চলে যাবে। একজন সাধারণ জুমচাষি এত টাকা খরচ করে ভোট দিতে আসবে কিনা সন্দেহ।
বান্দরবানের মোট ১৮২টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে নির্বাচন কর্মকর্তা ও নির্বাচনি সরঞ্জাম আনা–নেওয়ার জন্য ১২টিতে হেলিকপ্টার ব্যবহারের কথা রয়েছে। এছাড়া রুমা উপজেলার তিনটি, রোয়াংছড়ির একটি এবং আলীকদম উপজেলার একটি কেন্দ্রের জন্য হেলিকপ্টার ব্যবহার হবে।
থানচি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ মামুন বলেন, দুর্গম পথ এবং দূরত্ব বিবেচনা করে পরবর্তীতে কেন্দ্র বাড়ানো কর্তৃপক্ষের বিষয়। একমাত্র নির্বাচন কমিশন এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
আমাদের লক্ষ্য এখন ৭ জানুয়ারি নির্বাচন নিয়ে। থানচির রেমাক্রী ইউনিয়নের চারটি এবং তিন্দু ইউনিয়নে তিনটি কেন্দ্রে হেলিকপ্টার ব্যবহার করা হবে। এসব কেন্দ্রে নির্বাচনি সব সরঞ্জাম একদিন আগে যাবে।
দুর্গম এলাকায় সার্বিক প্রস্তুতির বিষয়ে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এস এম শাহাদাত হোসেন বলেন, এসব কেন্দ্রগুলোতে নির্বাচনি সরঞ্জাম এবং নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা একদিন আগে যাবেন। এমনও হতে পারে দুইদিন আগেও যেতে পারে, সেটা নির্ভর করবে আবহাওয়ার ওপর। তাদের সঙ্গে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা বাহিনীও থাকবে।